উত্তরঃ বিস্তারিত নীচে দেওয়া হল👇👇👇
জয় ও বিজয়
==> হিন্দু পুরাণ অনুসারে, জয় ও বিজয় ছিলেন শ্রীবিষ্ণুরবাসক্ষেত্র বৈকুণ্ঠধামের দুই দ্বাররক্ষী বা দ্বারপাল৷একদা চতুর্কুমার দ্বারা অভিশাপিত হয়ে উভয়কেই মর্তলোকে মরণশীল হয়ে একাধিক জন্ম নেন এবং প্রতিবারেই বিষ্ণুর অবতার দ্বারা নিহত হন৷ তারা পৃৃৃথিবীতে সত্যযুগে হিরণ্যাক্ষ ও হিরণ্যকশিপু, ত্রেতাযুগে রাবণ ও কুম্ভকর্ণ এবং শেষ জন্মে দ্বাপরযুগে শিশুপাল ও দন্তবক্র নামে অবতারজন্ম গ্রহণ করেন৷
চিত্রঃ বৈকুন্ঠের ঘটনাটি
চতুর্কুমারের অভিশাপঃ
ভাগবত পুরাণের একটি কাহিনী অনুসারে একদা ব্রহ্মা ও গায়ত্রীদেবীর মানসপুত্র চতুর্কুমার তথা সনক, সনন্দন, সনাতন ও সনৎকুমার একসঙ্গে বিষ্ণুর দর্শন পেতে বৈকুণ্ঠে এসে হাজির হন৷ তাদের তপস্যার জেরে তাঁরা দীর্ঘায়ীযুক্ত হলেও শিশুসদৃৃশ দেখতে ছিলো, কিন্তু দ্বারপাল জয় ও বিজয় এবিষয়ে বিশেষ অবগত ছিলেন না৷ ফলে তারা চতুর্কুমারকে শিশু ভেবে বৈকুণ্ঠের দ্বারের সম্মুখে আটকে দেন ও ভেতরে ঢুকতে বাধা দেন৷ তারা চতুর্কুমারকে এও বলেন যে বিষ্ণুদেব এখন শয্যাগ্রহণ করছেন ফলে তিনি এখন দর্শন দিতে অপারক৷ জয় ও বিজয়ের ওপর ক্রুদ্ধ হয়ে চতুর্কুমার তাদের প্রত্যুত্তরের বলেন যে বিষ্ণু তার দর্শনপ্রার্থীদের ও ভক্তদের জন্য সর্বদা উপলব্ধ থাকেন৷ এই বলে তারা দুই দ্বারপালকে অভিশাপ দেন যে তারা দুজনেই মরণশীল মানবরূপে ভূলোকে জন্মগ্রহণ করবেন তাঁদের সাধারণ মানুষের মতোই জন্মমৃত্যুর মায়াচক্রে জীবন অতিবাহিত করতে হবে৷ বিষ্ণু তাদের সম্মুখে প্রকট হলে জয় ও বিজয় তাকে অনুরোধ করেন এই শাপমোচনের কোনো উপায় করতে৷ বিষ্ণু বলেন ব্রহ্মাপুত্র চতুর্কুমারের শাপ বিফল করার কোনো পন্থা নেই বরং নিস্তারের দুটি পথ আছে৷ দ্বারপালগণ সেই উপায় জিজ্ঞাসা করলে বিষ্ণু বলেন হয় তাদেরকে সাধারণ মানুষ হয়ে সাতটি জন্মে পৃথিবীতে বিষ্ণুর সেবক হয়ে জন্ম নিতে হবে নতুবা দ্বিতীয় মতে তিনটি জন্মে পৃথিবীতে বিষ্ণুর বিভিন্ন অবতারের শত্রু হয়ে জন্ম নিতে হবে৷ এই দুটির যেকোনো একটি শর্ত পূরণ করে তবেই তারা আবার স্থায়ীভাবে বৈকুণ্ঠে প্রবেশ করতে পারবে৷ জয় এবং বিজয় উভয়ই সাতটি জন্ম অবধি শ্রীবিষ্ণুর থেকে দূরে থাকার কথা ভাবতেও পারতেন না, তাই তারা তিন জন্ম বিষ্ণুর একাধিক অবতারের শত্রুরূপে জন্মগ্রহণ করাকে স্বাচ্ছন্দবোধ করে শর্তপূরণের জন্য প্রস্তুত হন৷
পৃৃথিবীতে প্রথম জীবনে তারা কৃতযুগে মহর্ষি কশ্যপ এবং প্রজাপতি দক্ষর কন্যা দিতির দুই পুত্র হিরণ্যাক্ষ ও হিরণ্যকশিপু নামে জন্মগ্রহণ করেন৷ সত্যযুগে বিষ্ণুর অবতার বরাহ অবতার বধ করেন হিরণ্যাক্ষকে এবং ঐ যুগেই বিষ্ণুর নৃসিংহ অবতার বধ করেন হিরণ্যকশিপুকে৷ দ্বিতীয় জীবনে ত্রেতাযুগে তাঁরা ঋষি বিশ্রবা ও রাক্ষসী নিকষার দুই পুত্র রাবণ ও কুম্ভকর্ণ নামে জন্মগ্রহণ করেন৷ ঐ যুগেই বিষ্ণুর রামাবতার তাদের হত্যা করেন৷ তৃতীয় জীবনে দ্বাপরযুগে তারা শিশুপাল ও দন্তবক্র নামে জন্মলাভ করেন এবং কৃষ্ণের হাতে নিহত হন৷ এটা লক্ষ্য করা যায় যে প্রতি জন্মে জয় ও বিজয়ের মর্তে অবতারের শক্তি হ্রাস হতে থাকে৷ সত্যযুগে হিরণ্যাক্ষ ও হিরণ্যকশিপু হত্যা করতে বিষ্ণুকে আলাদা দুটি অবতাররূপে জন্ম নিতে হয়৷ আবার ত্রেতাযুগে রাম একা রাবণ ও কুম্ভকর্ণকে বধ করে৷ একইভাবে দ্বাপরযুগে দন্তবক্র ও শিশুপাল হত্যা করা কৃষ্ণরূপে অবতার গ্রহণের মূল লক্ষ্য কখনোই ছিলো না৷
আগামী পর্বেঃ কীভাবে মানব জাতির সৃষ্টি হয়েছে এবং হিন্দুদের আদি পিতা ও মাতা কে?
1 মন্তব্যসমূহ
Khub valo laglo dada
উত্তরমুছুনHare Krishna
আপনার মন্তব্য প্রকাশ করার সময় ভদ্রতা বজায় রাখবেন। আপনি আপনার পরিচয় দিয়ে কিংবা না দিয়ে কমেন্ট/মন্তব্য করতে পারবেন।
আর হে, কমেন্ট করতে হলে অবশ্যই VPN ব্যবহার করতে হবে কারণ website টির সংস্করণ চলমান রয়েছে।
ধন্যবাদ